বিশেষ প্রতিবেদন
সদর উপজেলার চারটি ইউনিয়ন নিয়ে সিরাজগঞ্জ-১ সংসদীয় আসন। এখানে রয়েছে আওয়ামী লীগের একচ্ছত্র আধিপত্য। স্বাধীনতার পর থেকে আজ অবধি অংশগ্রহণমূলক সব নির্বাচনেই জয়লাভ করেছে আওয়ামী লীগ। তবে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে চ্যালেঞ্জ জানাতে আটঘাট বেঁধে নামছে বিএনপি। যদিও দলটির সাংগঠনিক অবস্থা এখানে খুব একটা ভালো নয়।
বঙ্গবন্ধুর একান্ত সহচর শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর জন্মস্থান সিরাজগঞ্জ-১ (কাজীপুর) আসনে। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের হয়ে বিজয়ী হওয়ার পর তিনি প্রাদেশিক পরিষদের মন্ত্রী হন। তার মৃত্যুর পর পুত্র মোহাম্মদ নাসিমকে এই অঞ্চলের মানুষ তার পিতার স্থানে বসায়। ১৯৯৬ সালে এই আসন থেকে মোহাম্মদ নাসিমের বড় ভাই মোহাম্মদ সেলিম বিজয়ী হন। এরপর ২০০১ ও ২০১৪ সালে মোহাম্মদ নাসিম এই আসন থেকে নির্বাচন করে বিজয়ী হন। ২০০৮ সালে মামলা জটিলতার কারণে নাসিমের ছেলে তানভীর শাকিল জয় নির্বাচিত হন।
এক কথায় বলতে গেলে এই আসনটি আওয়ামী লীগের ঘাটি। তবে এই আসনে চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন দেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী কনক চাঁপা। তিনি সিরাজগঞ্জ-১ (কাজীপুর-সদরের একাংশ) আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে একাদশ জতীয় সংসদ নির্বাচন করতে যাচ্ছেন। তার প্রতিদ্বন্দী রয়েছেন আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
চ্যালেঞ্জের আসনে শুরুতেই বিপাকে পরেছেন কনক চাপা। কেননা, স্থানীয় কোন কর্মী তাকে সাহায্য করছেন না। আর নির্বাচন প্রচারণের আগে কর্মীদের এমন মনোভবে কিছুটা হতাশ হয়ে পড়েছেন এই কণ্ঠশিল্পী।
তিনি বলেন, আমি একজন কণ্ঠশিল্পী। দীর্ঘদিন গান করে আসছি। তবে গানের পাশাপাশি মানুষের পাশে থাকতে চাই। তাদের জন্য কিছু কাজ করে যেতে চাই। বিএনপি থেকে ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করতে যাচ্ছি। ১০ তারিখে আমি সিরাজগঞ্জ এসেছি। কিন্তু এখনও নির্বাচনের মাঠে নামতে পারিনি।
কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, কন্ঠশিল্পী হিসাবে আমি পরিচিত হলেও এমপি প্রার্থী হিসাবে আমি এখানে নতুন। কয়েক দিন হল আমি সিরাজগঞ্জ সদর-২ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর বাসায় অবস্থান করছি। কিন্তু দলীয় নেতাকর্মীরা আমাকে কোনো সহযোগিতা করছেনা। তাদের বললে আজ না কাল, কাল না পরশু। এমন করেই তারা পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে। নেতারা বলছেন, সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সভাপতি সম্পদকের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
তিনি বলেন, এদিকে নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসছে। এ আসনে বিএনপি থেকে একাধিক প্রার্থী ছিল কিন্তু কেন্দ্র থেকে আমাকে আমাকে মনোনয়ন দেওয়ায় অনেকের মন খারাপ। এজন্যই হয়ত আমাকে সহযোগিতা করছে না। তবুও আমি ধৈর্য্য ধরে আছি। সবাইকে নিয়ে নির্বাচনে থাকতে চাই।
এই শিল্পী বলেন, কেউ আমাকে সহযোগীতা না করলে, আমি নিজেই মাঠে নেমে যাব। জনগণ আমার সাথে আছে।
জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু জানান, দলীয় সহযোগীতা অবশ্যই আছে। আমি সিরাজগঞ্জ -১ আসনের নেতাকর্মীদের ডেকেছি। ওদের সাথে বসে সিদ্ধান্ত নিয়েই সকলে মিলে নির্বাচনে কাজ করবে।